MohomayaChapter 2/web series/ Review

                      ছবি: গুগল থেকে সংগৃহীত

পরিচালনা: কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়

প্রযোজক: সাহানা দত্ত, রোহিত সামন্ত

কাস্ট সম্পাদনা: স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়,অনন্যা চ্যাটার্জী, বিপুল পাত্র, সুজন মুখোপাধ্যায়

মূল ভাষা: বাংলা

আসল প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২১

IMDb rating: 4.9/10

তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা মন জানো না…” একই অঙ্গে থাকে অনেক রূপ। একথা শুনেছেন নিশ্চয়ই।জটিল ধাঁধার থেকেও জটিল মানুষের মন। কখনও মোহের জালে আটকে থাকে, আবার কখনও মায়ার বাঁধন তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রাখে। এই বাঁধনের কথাই তুলে ধরেছেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়।

ঋষি (বিপুল পাত্র) মুখ যত মিষ্টি, চোখ ততটাই প্রতিক্রিয়াপ্রবণ।যার অতীত তাঁর মৃত মা, মায়া (অনন্যা চ্যাটার্জী) এর চারপাশে ঘুরতে থাকা গোপন রহস্যের গভীর সমুদ্র।‌ ‘খাঁচার ভিতর’ যেমন ‘অচিন পাখি’ ছটফট করে, তেমনই অতীতের যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে ঋষি। তাঁর মায়ের স্মৃতি সারাক্ষণ তাঁকে যন্ত্রণার চোরাবালিতে আটকে রাখে। সে যখন তাঁর সহপাঠীর মা অরুনার (স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়) সাথে সাক্ষাত করেন, তখন ঋষি তাঁর সারাজীবনের জন্য যে স্নেহ কামনা করেছিলেন তা খুঁজে পায়। ঋষির বাস্তব-কল্পনা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। মাতৃস্নেহের বন্ধন হিসাবে যা শুরু হয়েছিল তা শীঘ্রই পুরোপুরি একটি সাধারণ পরিবারের জীবনকে নষ্টকারী বাধ্যতামূলক আবেশে পরিণত করে।

                   ছবি: গুগল থেকে সংগৃহীত

 প্রথমেই আমরা দেখতে পাই সুরঞ্জন ও অরুণা এক মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে তাদের মেয়ে মিঠি কে নিয়ে থাকতো। তাঁর বড় ছেলে ও ছোটো ছেলে বিদেশে থাকতো। মিকি যখন  কানাডা যাচ্ছিল তখন তাঁর শৈশবের বন্ধু ঋষি তাদের বাড়িতে অতিথি হিসেবে প্রবেশ করেছিলো।প্রথমদিকে অবিচ্ছিন্নতা সত্ত্বেও, অরুণা ধীরে ধীরে ঋষির প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং তাকে পরিবারের মতো আচরণ করে। ঋষির প্রবেশের সাথে সাথে একের পর এক  বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে।  বিড়াল রহস্যজনকভাবে মারা যায়, সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে মিঠি গুরুতর ভাবে আহত হয় । সুরঞ্জন, ঋষি এবং তার অতীত সম্পর্কে সন্দেহজনক হয় এবং মিকির বান্ধবী বৈশালীকে তার রহস্য জানতে বলেন। ঋষির রহস্য ভেদ করতে গিয়ে খুন হয় বৈশালী। তারপর কাহিনিতে আসে  অরুণার বড় ছেলে মিমো (সুহর্তা মুখোপাধ্যায়)। কাহিনিতে ঢুকেই মিমো এবং তাঁর মায়ের দ্বন্দ্ব। মায়ের অমতের শর্তেও অন্তঃসত্ত্বা প্রেমিকাকে বিয়ে করতে চায় মিমো। এই নিয়ে চলে টানাপোড়েন। অরুণার চোখের জল সহ্য হয় না ঋষির। ফলে সে মিমোকেও খুন করে। বাড়ির এরকম পরিস্থিতি এবং অরুণকে দেখে ধৈর্য্য হারায় সুরঞ্জন। বাধ্য হয়ে সে মিঠিকে নিয়ে চলে যায় দিদির বাড়িতে। সুরঞ্জনের জন্য অরুণকে ভেঙ্গে পড়তে দেখে তাকেও খুন করে ফেলে ঋষি। এতকিছুর মধ্যেই আবার ঋষির ছোটবেলার কাহিনি দেখানো হতে থাকে। 

               ছবি: গুগল থেকে সংগৃহীত

গতবার অনন্যার যন্ত্রণা অনবদ্যভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়।  এবার বাজিমাত করেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তাঁর অভিনয়ে সাবলীলতা আগেও ছিল। এবার প্রত্যেকটা মুহূর্তের সদ্বব্যহার করেছেন অভিনেত্রী। অরুণার স্বামী সুরঞ্জনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুজন মুখোপাধ্যায়। তাঁর চরিত্র শুধু অসহায় স্বামীর হয়েই রয়ে গেল। শুধুমাত্র ঋষির (Bipul Patra) চোখের ক্লোজআপ শট ব্যবহার করা হয়েছে। বার বার এই শট ব্যবহার একঘেয়ে লেগেছে। কিছু কিছু জায়গায় গানের ব্যবহার না করলেও চলত বলে মনে হয়েছে।

অতিমারীর এই সময়ে ডার্ক থ্রিলার দেখা এমনিতেই মনের পক্ষে বেশ কষ্টকর। সেক্ষেত্রে কিছু কিছু জায়গায় বেশ যন্ত্রণার অনুভূতি দর্শকমনকে দিয়েছেন পরিচালক। সবশেষে আরও একটি চ্যাপ্টারের আভাসও রয়েছে মিকির প্রত্যাবর্তনে। শ্মশানের মতো হয়ে যাওয়া অরুণার সংসারকে কি বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারবে তাঁর ছোটছেলে? আশা করি তার উত্তর পাবো পরের চ্যাপ্টারে।


Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

Criminal justice (season1)/ review

Asur/Web Series/Review